মার্কিন সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধে ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁ ও যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী কিয়ের স্টারমারকে নিষ্ক্রিয় থাকার অভিযোগ তুলেছেন। ইউরোপের এই দুই নেতার যুক্তরাষ্ট্র সফরের কিছুদিন আগেই তার এই মন্তব্য আসে, যা বিবিসির এক প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
ট্রাম্পের বক্তব্য: ইউক্রেনের হাতে নেই শান্তি আলোচনার তাস
ট্রাম্প ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সমালোচনা করে বলেছেন,
“শান্তি আলোচনায় খেলার মতো কোনো তাসই ইউক্রেনের হাতে নেই।”
তিনি আরও বলেছেন,
“আমি মনে করি না বৈঠকগুলোতে জেলেনস্কির উপস্থিতি খুব গুরুত্বপূর্ণ।”
২০২২ সালে রাশিয়া ইউক্রেনে আক্রমণ চালানোর পর থেকেই যুক্তরাজ্য, ফ্রান্সসহ ইউরোপীয় মিত্ররা কিয়েভকে বিপুল পরিমাণ অস্ত্র ও সহায়তা দিয়ে আসছে। তবে ট্রাম্পের মতে, শান্তি আলোচনার ক্ষেত্রে ইউক্রেনের অবস্থান দুর্বল।
ইউরোপের উদ্বেগ: ওয়াশিংটন-মস্কোর একক সিদ্ধান্ত
সৌদি আরবে রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের আসন্ন বৈঠকের আগের দিন প্যারিসে ইউক্রেন ইস্যুতে জরুরি সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়। ইউরোপের দেশগুলো আশঙ্কা করছে, ওয়াশিংটন ও মস্কো ইউক্রেন ও ইউরোপকে বাদ দিয়েই কোনো সমঝোতায় পৌঁছাতে পারে।
ট্রাম্পের মিশ্র প্রতিক্রিয়া: প্রশংসা ও সমালোচনা
ফক্স নিউজকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে ট্রাম্প ম্যাক্রোঁ ও স্টারমারের সমালোচনা করলেও তাদের প্রশংসাও করেছেন।
- ম্যাক্রোঁকে তিনি ‘বন্ধু’ বলে অভিহিত করেন।
- স্টারমারকে ‘খুবই চমৎকার মানুষ’ বলে উল্লেখ করেন।
ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট সোমবার ওয়াশিংটনে যাচ্ছেন, আর স্টারমার যাচ্ছেন বৃহস্পতিবার।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ বন্ধ নিয়ে ট্রাম্পের অবস্থান
ট্রাম্পের মতে, শুরু থেকেই আলোচনা করলে যুদ্ধ এড়ানো সম্ভব ছিল। তিনি বলেন,
“রাশিয়া আন্তরিকভাবে চুক্তি করতে চায়, তবে চুক্তি না হলেও প্রেসিডেন্ট পুতিনের কোনো সমস্যা নেই।”
ট্রাম্পের সমালোচনা: মস্কোকে তুষ্ট করার অভিযোগ
ট্রাম্পের অবস্থানকে সমালোচকরা ‘রাশিয়াকে তুষ্ট করার নীতি’ বলে অভিহিত করেছেন। তবে মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জেডি ভ্যান্স এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন,
“আমরা সংঘাত বন্ধে আলোচনা করছি। ইউক্রেনের জেতার কোনো পথ নেই, তাই এটাকে তুষ্ট করা বলা যাবে না।”
উপসংহার
ট্রাম্পের সাম্প্রতিক বক্তব্য ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে আন্তর্জাতিক রাজনৈতিক উত্তেজনা আরও বাড়াতে পারে। বিশেষ করে ইউরোপীয় নেতাদের নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ ও জেলেনস্কির অবস্থান নিয়ে তার মন্তব্য বিশ্ব কূটনীতিতে নতুন বিতর্ক তৈরি করেছে।