Home ক্রিকেট পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জয়ের মাধ্যমে বিদায় নিতে চায়

পাকিস্তান ও বাংলাদেশ জয়ের মাধ্যমে বিদায় নিতে চায়

13

দুটি দলই চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফি ২০২৫-এ নিজেদের সেরা পারফরম্যান্স দেখাতে ব্যর্থ হয়েছে। এখন তারা মুখোমুখি হবে রাওয়ালপিন্ডিতে, যেখানে মূল লক্ষ্য হবে সম্মানের জন্য খেলা। তবে, বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায় ম্যাচটি সম্পূর্ণ হওয়া নিয়েও রয়েছে শঙ্কা।

পাকিস্তান ও বাংলাদেশের ব্যর্থতা: কোথায় সমস্যা?

পাকিস্তান তাদের নিউজিল্যান্ড ও ভারতের বিপক্ষে ম্যাচগুলোতে হতাশাজনক পারফরম্যান্স দেখিয়েছে। ফখর জামান চোটের কারণে ছিটকে যাওয়ার পর, ইমাম-উল-হক সুযোগ পেলেও ভালো কিছু করতে পারেননি। সৌদ শাকিল ও বাবর আজম একটি করে হাফ-সেঞ্চুরি করলেও তা ম্যাচের গতিপথ পরিবর্তন করতে পারেনি। অন্যদিকে, মোহাম্মদ রিজওয়ান ফর্মে নেই, যদিও চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফির আগে ঘরের মাঠে একটি সেঞ্চুরি করেছিলেন।

মিডল অর্ডারেও একই অবস্থা। খুশদিল শাহ, সালমান আগা, ও তৈয়ব তাহির একই ধরনের ব্যাটিং করে যাচ্ছেন, যা দলের রানের গতি কমিয়ে দিচ্ছে। ফাহিম আশরাফকে সুযোগ দেওয়া হলে দলের ভারসাম্য ভালো হতে পারত, কিন্তু তাকে খেলানো হয়নি। ফাস্ট বোলাররাও ছন্দ হারিয়েছে। ভারতের বিপক্ষে শাহীন আফ্রিদি ও হারিস রউফ ছিল ব্যর্থ, নাসিম শাহ কিছুটা ভালো করলেও নিজের স্বাভাবিক ফর্মে ছিলেন না।

বাংলাদেশের অবস্থাও খুব একটা ভালো নয়। তাদের ব্যাটিং একপাক্ষিক এবং ধীরগতির, যেখানে লোয়ার অর্ডারকে বারবার দলকে বাঁচাতে হচ্ছে। ভারতের বিপক্ষে তাদের টপ অর্ডার ভেঙে পড়ে, নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে মাইকেল ব্রেসওয়েলের স্পিনেই ধসে পড়ে মিডল অর্ডার। নাজমুল হোসেন শান্ত ও জাকার আলী ধারাবাহিকতা দেখালেও দলের জন্য তা যথেষ্ট ছিল না।

তবে, বাংলাদেশ চায় মুশফিকুর রহিম ও মাহমুদউল্লাহ দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে সম্ভবত তাদের শেষ আইসিসি ইভেন্ট শেষ করুক। মাহমুদউল্লাহ মাত্র এক ম্যাচ খেলেছেন, যেখানে ব্যর্থ হয়েছেন, কিন্তু মুশফিকের অভিজ্ঞতা দলে গুরুত্বপূর্ণ।

তাসকিন আহমেদ ও নাহিদ রানা বাংলাদেশের পেস আক্রমণের মূল ভরসা, যদিও মোস্তাফিজুর রহমান ধারাবাহিক থাকলেও আগের মতো বিধ্বংসী নন। মেহেদি হাসান মিরাজ ও রিশাদ হোসেন-এর জন্য স্পিনের দায়িত্ব আরও বেশি থাকবে, কারণ রাওয়ালপিন্ডির উইকেট স্পিনারদের সহায়তা করতে পারে।

আগামী পরিকল্পনা ও দলের ভবিষ্যৎ

দুটি দলই শুধু এই ম্যাচের দিকে তাকিয়ে নেই, বরং আগামী আইসিসি টুর্নামেন্টগুলোর জন্য নিজেদের প্রস্তুত করতে হবে। ঘরোয়া ক্রিকেটে পরিবর্তন এনে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে ভালো পারফরম্যান্স দেওয়ার পথ খুঁজতে হবে। পাকিস্তান ও বাংলাদেশ একটি ট্রানজিশনের দিকে যাচ্ছে, তাই এখন থেকেই সঠিক কৌশল নির্ধারণ করতে হবে।

শেষ ৫ ম্যাচের পারফরম্যান্স

  • পাকিস্তান: ❌❌❌✅❌
  • বাংলাদেশ: ❌❌❌❌❌

দৃষ্টি আকর্ষণ: আবরার আহমেদ ও জাকার আলী

পাকিস্তানের জন্য আবরার আহমেদ এখন পর্যন্ত উজ্জ্বল দিকগুলোর একটি। তার শুভমান গিলকে আউট করার বলটি ছিল অসাধারণ, যদিও তার উদযাপন বেশি আলোচিত হয়েছে। তবে বাংলাদেশ গত বছর রাওয়ালপিন্ডিতে তাকে ভালোভাবে সামলেছে, এবার কী হবে তা দেখার বিষয়।

বাংলাদেশের জাকার আলী লোয়ার মিডল অর্ডারে দুর্দান্ত ফর্মে আছেন। মাত্র ৭টি ওয়ানডে খেলে ৫০-এর বেশি গড়ে ব্যাট করছেন এবং ইতোমধ্যে দুটি ফিফটি করেছেন। ডেথ ওভারে তিনি গুরুত্বপূর্ণ ব্যাটসম্যান, কিন্তু তাকে আরও ভালো পারফর্ম করতে হবে।

দল গঠনের সম্ভাবনা: পরিবর্তন আসবে কি?

পাকিস্তান: তারা একজন পেসারকে বাদ দিয়ে মোহাম্মদ হাসনাইন বা ফাহিম আশরাফকে সুযোগ দিতে পারে। ব্যাটিংয়ে উসমান খান ও কামরান গুলাম অপশন হিসেবে আছে।

সম্ভাব্য একাদশ:

  1. ইমাম-উল-হক/উসমান খান
  2. বাবর আজম
  3. সৌদ শাকিল
  4. মোহাম্মদ রিজওয়ান (অধিনায়ক, উইকেটকিপার)
  5. সালমান আগা
  6. তৈয়ব তাহির
  7. খুশদিল শাহ
  8. শাহীন শাহ আফ্রিদি/মোহাম্মদ হাসনাইন
  9. নাসিম শাহ
  10. হারিস রউফ
  11. আবরার আহমেদ

বাংলাদেশ: তারা সম্ভবত একই দল নিয়েই মাঠে নামবে

সম্ভাব্য একাদশ:

  1. তানজিদ হাসান
  2. নাজমুল হোসেন শান্ত (অধিনায়ক)
  3. মেহেদি হাসান মিরাজ
  4. তৌহিদ হৃদয়
  5. মুশফিকুর রহিম (উইকেটকিপার)
  6. মাহমুদউল্লাহ
  7. জাকার আলী
  8. রিশাদ হোসেন
  9. তাসকিন আহমেদ
  10. মোস্তাফিজুর রহমান
  11. নাহিদ রানা

পিচ ও আবহাওয়া পরিস্থিতি

রাওয়ালপিন্ডিতে বৃষ্টির শঙ্কা রয়েছে, তাই পাকিস্তান চাইবে যেন তাদের শেষ ম্যাচটি বৃষ্টির কারণে পরিত্যক্ত না হয়। আগের ম্যাচটি (দক্ষিণ আফ্রিকা বনাম অস্ট্রেলিয়া) বৃষ্টির কারণে হয়নি। উইকেট কয়েকদিন ধরে কভারের নিচে থাকায় পিচে অতিরিক্ত আর্দ্রতা থাকতে পারে, যা বোলারদের সাহায্য করতে পারে।

উল্লেখযোগ্য পরিসংখ্যান ও তথ্য

  • এই প্রথমবার পাকিস্তান ও বাংলাদেশ চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে একে অপরের মুখোমুখি হচ্ছে।
  • ২০০৩ সালে রাওয়ালপিন্ডিতে একমাত্র ওয়ানডে ম্যাচে পাকিস্তান বাংলাদেশকে হারিয়েছিল।
  • ওয়ানডেতে পাকিস্তান তাদের ঘরের মাঠে বাংলাদেশের বিপক্ষে ১২-০ ব্যবধানে এগিয়ে আছে।
  • বাংলাদেশের পেসাররা পাকিস্তানের পেসারদের তুলনায় কিছুটা ভালো পারফর্ম করেছে। বাংলাদেশের পেসারদের গড় ৪৪.৮৩ ও ইকোনমি ৫.১২, যেখানে পাকিস্তানের পেসারদের গড় ৬৩.৫০ ও ইকোনমি ৭.১৮।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here