Home বাংলাদেশ কর্মবিরতি চলছে, মেট্রোরেল চলমান, ভাড়া আদায়ে সমস্যা

কর্মবিরতি চলছে, মেট্রোরেল চলমান, ভাড়া আদায়ে সমস্যা

21
ছবি: সংগৃহীত
মেট্রোরেল কর্মীদের কর্মবিরতি: টিকিটিং জটিলতায় দুর্ভোগে যাত্রীরা

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের (ডিএমটিসিএল) চারজন কর্মী এমআরটি পুলিশের সদস্যদের দ্বারা মৌখিক ও শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার প্রতিবাদে মেট্রোরেল কর্মীরা কর্মবিরতি পালন করছেন। এর ফলে সোমবার সকাল থেকে মেট্রোরেল চলাচলে নানা জটিলতা দেখা দিয়েছে, বিশেষ করে টিকিটিং সিস্টেমে বড় ধরনের সমস্যা তৈরি হয়েছে।

মেট্রোরেলে ফ্রি যাতায়াতের সুযোগ

সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে অনেকেই জানিয়েছেন, কর্মবিরতির ফলে তারা বিনামূল্যে মেট্রোরেলে চলাচল করতে পেরেছেন। বেসরকারি চাকরিজীবী তাপসী রায় জানান, ফার্মগেট স্টেশনে কার্ড পাঞ্চ করে ট্রেনে উঠলেও কারওয়ান বাজারে নামার সময় মেশিন অচল দেখতে পান, ফলে বিনা খরচে বেরিয়ে আসতে পেরেছেন। একই ধরনের অভিজ্ঞতা হয়েছে অপু আহমেদেরও, যিনি মতিঝিল থেকে কারওয়ান বাজারে আসেন।

তবে সকাল ১০টার দিকে উত্তরা স্টেশন থেকে কারওয়ান বাজারে আসা এক যাত্রী জানিয়েছেন, তার ক্ষেত্রে স্বাভাবিকভাবে কার্ড পাঞ্চ হয়েছে এবং ভাড়াও কাটা হয়েছে।

কর্মীদের ছয় দফা দাবি

ঢাকা ম্যাস ট্রানজিট কোম্পানি লিমিটেডের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে ছয় দফা দাবি উত্থাপন করেছেন:

  1. এমআরটি পুলিশ সদস্য এসআই মাসুদকে স্থায়ীভাবে বরখাস্ত করা এবং সংশ্লিষ্ট অন্যান্য পুলিশ সদস্যদের (কনস্টেবল রেজনুল, ইন্সপেক্টর রঞ্জিত) শাস্তির আওতায় এনে প্রকাশ্যে ক্ষমা চাওয়ানো।
  2. মেট্রোরেল, কর্মী ও যাত্রীদের নিরাপত্তার জন্য নিজস্ব সশস্ত্র বাহিনী গঠন করা ও এমআরটি পুলিশ বাতিল করা।
  3. স্টেশন কর্মীদের শতভাগ নিরাপত্তা নিশ্চিত করা।
  4. অফিসিয়াল পরিচয়পত্র ও অনুমতি ছাড়া কেউ যেন পেইড জোনে প্রবেশ করতে না পারে, তা নিশ্চিত করা।
  5. আহত কর্মীদের চিকিৎসার সম্পূর্ণ দায়িত্ব নেওয়া।
কেন এই আন্দোলন?

সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে, বিকেল ৫টার দিকে দুই নারী কোনো পরিচয়পত্র না দেখিয়ে বিনা টিকিটে মেট্রোরেলে ভ্রমণ করেন এবং পেইড জোন থেকে বের হতে গেলে দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মীরা নিয়ম অনুযায়ী কারণ জানতে চান। এতে পুলিশ সদস্যরা ক্ষিপ্ত হয়ে তর্কে লিপ্ত হন।

এরপর এপিবিএন সদস্যরা একইভাবে সুইংগেট ব্যবহার করে বের হওয়ার চেষ্টা করলে তাদের কারণ জিজ্ঞাসা করলে পুলিশ আরও ক্ষুব্ধ হয়। একপর্যায়ে এমআরটি পুলিশের কন্ট্রোল রুম থেকে আরও কয়েকজন পুলিশ এসে এক কর্মীকে বন্দুক দিয়ে আঘাত করেন এবং অপর এক কর্মীর শার্টের কলার ধরে মারধর করেন। এমনকি গুলি করার হুমকিও দেওয়া হয়।

মেট্রোরেল কর্তৃপক্ষের অবস্থান

ডিএমটিসিএলের জনসংযোগ কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম জানিয়েছেন, কর্মীদের কর্মবিরতির কারণে মেট্রোরেল চলাচলে কোনো বিঘ্ন ঘটেনি, তবে রাজস্ব আয়ের ক্ষেত্রে কিছু সমস্যা হচ্ছে। কর্তৃপক্ষ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে কর্মীদের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

পরবর্তী কর্মসূচি

মেট্রোরেল কর্মীরা দাবি পূরণ না হলে আরও কঠোর কর্মসূচি পালনের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন। তারা নিরাপদ ও সুশৃঙ্খল কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে প্রশাসনের দ্রুত পদক্ষেপ প্রত্যাশা করছেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here