গুলিস্তান ফুটপাতের ঈদবাজার: ক্রেতার অপেক্ষায় দোকানিরা
রাজধানী ঢাকার গুলিস্তানে ফুটপাতের দোকানিরা শিশু ও বড়দের কাপড়ের পসরা সাজিয়ে বসেছেন, তবে রোজার অর্ধেক পার হলেও তাদের বিক্রি জমে ওঠেনি। কম আয়ের মানুষদের জন্য স্বল্পমূল্যের পোশাকের বাজার হলেও এবার তুলনামূলকভাবে ক্রেতার সংখ্যা কম বলে জানাচ্ছেন বিক্রেতারা।
ফুটপাতের বিক্রেতাদের অপেক্ষা ঈদের শেষ মুহূর্তের ক্রেতার জন্য
ফুটপাতে শিশুদের পোশাক বিক্রি করা ইমরান হোসেন বললেন, “চানরাইত পর্যন্ত দেহন লাগব। সদরঘাট হইয়া মানুষ ঢাকা ছাড়ার সময় কিনতে আসবে, সেই আশায় আছি।”
ঢাকার মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া থেকে আসা আউয়াল মিয়া বলেন, “এখানে কম দামে পাওয়া যায়, আমাদের মতো গরিবেরা তো বড় মার্কেটে যেতে পারে না।”
ফুটপাতের দোকানে ঈদের পোশাকের দাম কত?
গোলাপ শাহ মাজার, বঙ্গবন্ধু অ্যাভিনিউ হকার্স সমিতি মার্কেট, গুলিস্তান মোড় ও জাতীয় গ্রন্থাগারের আশপাশের ফুটপাতের দোকানগুলোতে পাওয়া যাচ্ছে:
- শিশুদের পোশাক: ৫০ থেকে ৫০০ টাকা
- বড়দের শার্ট ও টি-শার্ট: ১০০ থেকে ৫০০ টাকা
- টং দোকানে দাম কিছুটা বেশি: ৩০০ থেকে ১৫০০ টাকা
বিক্রেতারা বলছেন— এবার কেনাকাটা কম!
ফুটপাতের দোকানি মো. রিফাত বলেন, “গুলিস্তানে দাঁড়িয়ে সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত মাত্র ৬০০ টাকা বিক্রি হয়েছে। অন্য বছর এমন হত না।”
টং দোকানের মালিক মো. রানা বলেন, “সারা দিনে মাত্র ৩ হাজার টাকা বিক্রি করেছি, অন্য বছর এই সময়ে ২০-২৫ হাজার টাকা বিক্রি হত।”
গোলাপ শাহ মাজারের ফুটপাতের বিক্রেতা আল আমিন বলেন, “গত বছর প্রতিদিন ১০-১২ হাজার টাকা বিক্রি হত, আজকে দুই দোকানে মাত্র ৮০০ টাকা বিক্রি হয়েছে।”
স্বল্প আয়ের মানুষের ভরসা ফুটপাতের বাজার
ঢাকা মেডিকেল থেকে ফেরার পথে ঈদের পোশাক কিনতে আসা কুমিল্লার খায়রুল ইসলাম বলেন, “কম দামে ভালো কাপড় পাওয়া যায় বলেই এখান থেকে কিনি। ঈদের আগে আর আসার সুযোগ হবে না, তাই এবার একবারেই কেনাকাটা সেরে নিচ্ছি।”
বাজারের ভবিষ্যৎ কী?
ফুটপাতের ব্যবসায়ীরা আশায় আছেন, ঈদের আগে স্বল্প আয়ের মানুষরা বেতন পেয়ে কেনাকাটায় আসবে। তবে চলমান অর্থনৈতিক মন্দার কারণে মানুষ খরচে সতর্ক থাকছে, যা ফুটপাতের ব্যবসায়ও প্রভাব ফেলছে।