Home বিজ্ঞ্যানপ্রযুক্তি ছায়াপথে বিশাল তারাগুচ্ছের জন্মের ঐতিহাসিক সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

ছায়াপথে বিশাল তারাগুচ্ছের জন্মের ঐতিহাসিক সন্ধান পেলেন বিজ্ঞানীরা

12
মিল্কিওয়ের কাছের ছায়াপথে বিশাল তরুণ তারার জন্মের রহস্য উন্মোচন

মহাবিশ্বে বড় আকারের তরুণ তারার জন্ম কীভাবে হয়, সে বিষয়ে চমকপ্রদ এক আবিষ্কার করেছেন জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা। নাসার জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ (JWST) ও আটাকামা লার্জ মিলিমিটার/সাবমিলিমিটার অ্যারে (ALMA) ব্যবহার করে লার্জ ম্যাজেলানিক ক্লাউড (LMC) নামের একটি ছোট ছায়াপথে বিরল এক নবজাতক তারাগুচ্ছ শনাক্ত করেছেন তারা।

মহাবিশ্বের প্রাচীন তারাগুচ্ছের মতোই নতুন আবিষ্কার

প্রায় ৬০০ থেকে ৭০০ কোটি বছর আগে বিশাল তারাগুচ্ছগুলো প্রতি বছর শত শত তারার জন্ম দিত। তবে সময়ের সঙ্গে সঙ্গে এ ধরনের তারা গঠনের হার কমে যায় এবং বর্তমানে মহাবিশ্বে বড় তারাগুচ্ছ খুবই বিরল। এখন পর্যন্ত মিল্কিওয়েতে মাত্র দুটি এবং LMC-তে একটি সুপার স্টার রয়েছে, যা সবই কোটি কোটি বছর পুরনো।

কিন্তু এবার JWST টেলিস্কোপ নতুন এক তরুণ তারাগুচ্ছের সন্ধান পেয়েছে, যার বয়স মাত্র এক লাখ বছর। এই আবিষ্কার বিজ্ঞানীদের বাস্তব সময়ে তারার জন্ম প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণের সুযোগ করে দিয়েছে।

এক লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে বিরল তারাগুচ্ছ

LMC আমাদের ছায়াপথ থেকে এক লাখ ৬০ হাজার আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। বিজ্ঞানীরা মনে করছেন, এটি গবেষণার জন্য আদর্শ স্থান, কারণ LMC-তে ভারী উপাদানের পরিমাণ কম। এর ফলে, এর তারাগুলো ঠিক সেই পরিবেশে গঠিত হচ্ছে যেমনটি কোটি কোটি বছর আগে মহাবিশ্বের প্রথম তারাগুলো জন্ম নিয়েছিল।

JWST-এর ‘মিড-ইনফ্রারেড ইনস্ট্রুমেন্ট (MIRI)’ ব্যবহার করে N79 নামের অঞ্চলে ৯৭টি তরুণ তারা পর্যবেক্ষণ করা হয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ আবিষ্কার হলো ‘H72.97-69.39’ নামের একটি বিশাল তারাগুচ্ছ, যেখানে অসংখ্য তরুণ, বিশাল ও উজ্জ্বল তারা রয়েছে।

সূর্যের চেয়ে পাঁচ লাখ গুণ বেশি উজ্জ্বল তারাগুচ্ছ

JWST-এর ছবি বিশ্লেষণে দেখা গেছে, ‘H72.97-69.39’ তারাগুচ্ছে পাঁচটি বিশাল তারা রয়েছে, যা একসময় বিজ্ঞানীরা একটি একক দানবাকৃতি তারা বলে মনে করতেন। এর মধ্যে একটি তারা সূর্যের চেয়ে পাঁচ লাখ গুণ বেশি উজ্জ্বল।

এছাড়া, এই তারাগুচ্ছের চারপাশে আরও ১,৫০০-এর বেশি তরুণ তারা ছড়িয়ে আছে।

মহাবিশ্বের তারাগঠনের রহস্য উন্মোচনে নতুন দিগন্ত

গবেষণা দলের প্রধান ইশা নায়েক বলেছেন,
“LMC-তে তরুণ তারাদের নিয়ে গবেষণা করে আমরা দেখেছি, কীভাবে সূর্যের মতো তারাগুলো গঠিত হয়। এই প্রথমবারের মতো আমরা তারাগঠনের বিস্ময়কর প্রক্রিয়াটি এত বিশদভাবে পর্যবেক্ষণ করেছি।”

এই গবেষণা মহাবিশ্বে প্রাচীন তারাগঠনের মডেল ও বর্তমান তারাদের বিবর্তন সম্পর্কে বিজ্ঞানীদের নতুন দৃষ্টিভঙ্গি দেবে বলে আশা করা হচ্ছে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here