পাবনার চাটমোহরে বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর, অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা
পাবনার চাটমোহরে পূর্ববিরোধ ও আধিপত্য বিস্তারের জেরে এক বিএনপি নেতার বাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের অভিযোগ উঠেছে।
শুক্রবার (৭ মার্চ) বিকেল ৪টার দিকে এ হামলার ঘটনা ঘটে। অভিযোগের তীর চাটমোহর উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক একরামুল হক মামুনের দিকে।
হামলার অভিযোগ
ভুক্তভোগী সাইফুল ইসলাম, ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক, অভিযোগ করে বলেন—
- মামুনের নেতৃত্বে ১০-১২ জন সহযোগী বিকেলে তার বাড়িতে হামলা চালায়।
- ঘটনার সময় তিনি বাড়িতে ছিলেন না, তবে নারীরা আতঙ্কিত হয়ে পড়ে।
- প্রধান ফটক ভাঙার চেষ্টা ব্যর্থ হলে, টিনের ঘর ও রান্নাঘর ভাঙচুর করা হয়।
- জানালা ভেঙে ঘরের ভেতরে আগুন ধরিয়ে দেওয়া হয়, পরে পরিবারের লোকজন আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।
হামলার কারণ কী?
সাইফুল ইসলাম দাবি করেন, পবাখালী মিনহাজ মোড় জামে মসজিদের বরাদ্দকৃত চাল তোলা নিয়ে দুই পক্ষের বিরোধের জেরে তাকে ষড়যন্ত্র করে ফাঁসানো হচ্ছে।
তিনি বলেন—
- আমি মসজিদ কমিটির কেউ নই, আমার বাড়ি অন্য জায়গায়। তবুও মসজিদের চাল আত্মসাতের ঘটনায় মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে।
- এছাড়া শুক্রবার দুই পক্ষের মারামারিতেও আমাকে জড়িয়ে অপবাদ দেওয়া হচ্ছে।
- আমি এসব ষড়যন্ত্রের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অভিযুক্তদের বিচার চাই।
স্থানীয় নেতাদের প্রতিক্রিয়া
ফৈলজানা ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবক দলের সভাপতি মনিরুল ইসলাম বলেন—
আমার চাচা সাইফুল ইসলাম দীর্ঘদিন ধরে রাজনীতি করছেন। মামুন তাকে হেয় করে নিজেকে বড় নেতা হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করতে চাইছে।
এজন্য বিভিন্নভাবে ষড়যন্ত্র চালিয়ে যাচ্ছে।
ফৈলজানা ইউনিয়ন বিএনপির সদস্য সচিব আব্দুর রাজ্জাক পালন বলেন—
আমি ঘটনাস্থলে এসে ভাঙচুরের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। নিজ দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে এমন হামলা দুঃখজনক।
আমি এই ঘটনার নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে দলের উচ্চপর্যায়ের নেতাদের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতার বক্তব্য
অভিযুক্ত ছাত্রদল নেতা একরামুল হক মামুন এ অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন—
মসজিদের চাল চুরির ঘটনা ফাঁস হয়ে যাওয়ার পর সাইফুল ইসলাম ও তার লোকজন মুসল্লিদের মারধর করে। এতে এলাকাবাসী ক্ষুব্ধ হয়ে তার বাড়িতে হামলা চালায়।
আমি এই হামলার সঙ্গে কোনোভাবেই জড়িত নই। এখন সে মিথ্যা অভিযোগ এনে আমাকে ফাঁসানোর চেষ্টা করছে।
পুলিশের বক্তব্য
চাটমোহর থানার ওসি মঞ্জুরুল আলম জানান—
এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ অভিযোগ দায়ের করেনি। অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এ ধরনের রাজনৈতিক সহিংসতা বন্ধে দ্রুত প্রশাসনিক ব্যবস্থা নেওয়া জরুরি। এই ঘটনার সত্যতা উদঘাটনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কঠোর পদক্ষেপ প্রয়োজন।