Home আন্তর্জাতিক তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য কী সংকেত দিচ্ছে?

তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য বাংলাদেশের জন্য কী সংকেত দিচ্ছে?

6
ছবি: এএফপি
তুলসী গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ মন্তব্য: ইসলামি খেলাফত ইস্যুতে বিতর্ক ও প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশে সংখ্যালঘু নির্যাতন ও ইসলামি খেলাফত প্রসঙ্গে তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য এখন আলোচনার কেন্দ্রবিন্দু।

সম্প্রতি ভারতের নয়াদিল্লিতে অনুষ্ঠিত গোয়েন্দা প্রধানদের এক সম্মেলনে মার্কিন গোয়েন্দা প্রধান তুলসী গ্যাবার্ড বাংলাদেশ নিয়ে কিছু মন্তব্য করেন, যা নিয়ে ব্যাপক বিতর্ক শুরু হয়েছে। বিশেষ করে তাঁর “ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার চেষ্টা” সংক্রান্ত মন্তব্য নিয়ে বিভিন্ন মহলে প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে।

তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য কী ছিল?

গত ১৭ মার্চ, এনডিটিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে গ্যাবার্ড বলেন, “বাংলাদেশে হিন্দু, বৌদ্ধ, খ্রিস্টানসহ অন্যান্য সংখ্যালঘুদের ওপর দীর্ঘদিন ধরে নির্যাতন চলছে। এটি মার্কিন সরকার এবং ট্রাম্প প্রশাসনের জন্য উদ্বেগের বিষয়।” তিনি আরও বলেন, “বিশ্বব্যাপী ইসলামপন্থী সন্ত্রাসবাদের উত্থান ঠেকাতে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প প্রতিশ্রুতিবদ্ধ এবং তার প্রশাসন বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের সঙ্গে আলোচনা করছে।”

বাংলাদেশ প্রসঙ্গে ‘ইসলামি খেলাফত’ প্রসঙ্গ

গ্যাবার্ড বলেন, “ইসলামপন্থী সন্ত্রাসীরা ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে সহিংসতা চালাচ্ছে। ইসলামপন্থী গোষ্ঠীগুলো একই মতাদর্শ অনুসরণ করে এবং তাদের লক্ষ্য অন্যান্য ধর্মাবলম্বীদের ওপর আক্রমণ করা।”

এই বক্তব্য আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে আলোড়ন তুলেছে। বিশেষত ভারতের ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকারের দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে এটি মিলে গেছে।

গ্যাবার্ডের ব্যক্তিগত পটভূমি ও ভারত সংযোগ

তুলসী গ্যাবার্ড একজন সাবেক মার্কিন সেনা কর্মকর্তা, যিনি ইরাক ও কুয়েত যুদ্ধে অংশ নিয়েছিলেন। তিনি রিপাবলিকান দলে যোগ দেওয়ার পর ভারত সফর করেন এবং আরএসএস সদর দপ্তর পরিদর্শন করেন। তাঁর মা হিন্দু ধর্ম গ্রহণ করেছিলেন এবং গ্যাবার্ড নিজেও হিন্দু ভাবাদর্শ দ্বারা প্রভাবিত। এসব কারণেই তাঁর বক্তব্যকে ভারতের হিন্দুত্ববাদী রাজনৈতিক মহল ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে।

বাংলাদেশ সরকারের প্রতিক্রিয়া

বাংলাদেশ সরকার তুলসীর মন্তব্যকে বিভ্রান্তিকর ও অন্যায্য বলে নাকচ করেছে। এক বিবৃতিতে বলা হয়েছে, “বাংলাদেশের ভাবমূর্তি নষ্টের অপপ্রয়াসের অংশ হিসেবে এই মন্তব্য করা হয়েছে।”

মন্তব্যের আন্তর্জাতিক প্রভাব

বিশ্লেষকরা বলছেন, তুলসী গ্যাবার্ডের বক্তব্য যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের কূটনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। ভারতের মিডিয়া এই বক্তব্যকে প্রচার করে বাংলাদেশকে একটি জঙ্গি-আশ্রয়দাতা রাষ্ট্র হিসেবে দেখানোর চেষ্টা করছে।

শেষ কথা

তুলসী গ্যাবার্ডের বাংলাদেশ সংক্রান্ত মন্তব্য এবং “ইসলামি খেলাফত প্রতিষ্ঠার হুমকি” প্রসঙ্গ এখন আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে নতুন আলোচনার জন্ম দিয়েছে। এটি যুক্তরাষ্ট্র, ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যকার কূটনৈতিক সম্পর্কে নতুন উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here