Home আন্তর্জাতিক নির্বাচনের মাধ্যমে জেলেনস্কির পতন ঘটালে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে

নির্বাচনের মাধ্যমে জেলেনস্কির পতন ঘটালে পরিস্থিতি ভয়াবহ হতে পারে

28
ছবি: সংগৃহীত
ইউক্রেনে রাজনৈতিক অস্থিরতা: প্রেসিডেন্ট জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমছে, প্রতিদ্বন্দ্বীরা শক্তিশালী হচ্ছে

২৮ ফেব্রুয়ারি ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বহুল প্রতীক্ষিত বৈঠক করেন। মূল লক্ষ্য ছিল যুক্তরাষ্ট্রের সমর্থন নিশ্চিত করা। তবে বৈঠকটি আশানুরূপ হয়নি। বরং, ট্রাম্প ও মার্কিন ভাইস প্রেসিডেন্ট জে ডি ভ্যান্স প্রকাশ্যে জেলেনস্কিকে ভর্ৎসনা করেন এবং যুদ্ধবিরতির মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় তাঁর সমালোচনা করেন।

জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমছে, জনমনে অসন্তোষ বাড়ছে

রাশিয়ার আগ্রাসনের আগে জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা কমে গিয়েছিল, তখন তাঁর গ্রহণযোগ্যতা ছিল মাত্র ২৮%। যুদ্ধ চলাকালীন সময়ে এটি ৯০%-এ পৌঁছায়, তবে ধীরে ধীরে কমতে থাকে। ২০২৪ সালের এপ্রিলে ৫৪% এবং ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে ৪৯%-এ নেমে আসে।

জেলেনস্কির জনপ্রিয়তা হ্রাসের প্রধান কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা প্রশাসনের দুর্নীতির অভিযোগ এবং দীর্ঘমেয়াদী যুদ্ধের ক্লান্তিকে দায়ী করছেন।

ভ্যালেরি জালুঝনি: জেলেনস্কির সবচেয়ে বড় প্রতিদ্বন্দ্বী?

সাবেক সেনাপ্রধান জেনারেল ভ্যালেরি জালুঝনি জেলেনস্কির জন্য সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক চ্যালেঞ্জ হয়ে উঠতে পারেন। ২০২৫ সালের জানুয়ারিতে তাঁর প্রতি জনগণের আস্থা ৭২%, যা জেলেনস্কির তুলনায় অনেক বেশি।

জালুঝনি ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত ইউক্রেনের সশস্ত্র বাহিনীর প্রধান ছিলেন। কিন্তু ২০২৩ সালে ব্যর্থ পাল্টা আক্রমণের পর জেলেনস্কি তাঁকে বরখাস্ত করেন এবং পরবর্তীতে তাঁকে যুক্তরাজ্যে ইউক্রেনের রাষ্ট্রদূত হিসেবে পাঠানো হয়।

যদিও এখনো তিনি প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেননি, তবে ভবিষ্যতে সিদ্ধান্ত বদলানোর সম্ভাবনা উড়িয়ে দেওয়া যাচ্ছে না।

আরো শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীরা আসছেন?

কিরিলো বুদানভ – ইউক্রেনের গোয়েন্দাপ্রধান, যার জনপ্রিয়তা ৬২%। যদিও সম্প্রতি তিনি জনসমক্ষে আসা বন্ধ করে দিয়েছেন, তবে নির্বাচনে অংশ নিতে পারেন বলে ধারণা করা হচ্ছে।

ওলেক্সান্দ্র উসিক – প্রখ্যাত বক্সিং তারকা। জরিপ অনুযায়ী, তাঁর জনপ্রিয়তা ৬০%। ইউক্রেনের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে কৌতুক অভিনেতা প্রেসিডেন্ট হতে পারলে, একজন সফল ক্রীড়াবিদও সম্ভাব্য প্রার্থী হতে পারেন।

পেত্রো পোরোশেঙ্কো – ইউক্রেনের সাবেক প্রেসিডেন্ট, যিনি জেলেনস্কির অন্যতম পুরোনো প্রতিদ্বন্দ্বী। তবে তাঁর বিরুদ্ধে ১৩০টিরও বেশি মামলা রয়েছে, যার মধ্যে একটি রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগ।

রাজনৈতিক দমন-পীড়ন ও জেলেনস্কির ভবিষ্যৎ

বিশ্লেষকরা মনে করছেন, জেলেনস্কি রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীদের দমন করছেন, যাতে তারা নির্বাচনে অংশ নিতে না পারেন। এরই অংশ হিসেবে পোরোশেঙ্কোর বিরুদ্ধে ‘জাতীয় নিরাপত্তা ঝুঁকি’ দেখিয়ে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়েছে এবং তাঁর সম্পদ জব্দ করা হয়েছে।

যদিও জেলেনস্কির পশ্চিমা মিত্ররা এখনো প্রকাশ্যে কোনো কঠোর সমালোচনা করেননি, তবে রাজনৈতিক অস্থিরতার কারণে ইউক্রেনে নতুন নেতৃত্বের প্রয়োজনীয়তা বাড়ছে।

উপসংহার

ইউক্রেনে রাজনৈতিক পরিস্থিতি প্রতিনিয়ত পরিবর্তন হচ্ছে। জনপ্রিয়তা হারিয়ে জেলেনস্কি এখন চাপে আছেন। শক্তিশালী প্রতিদ্বন্দ্বীরা সামনে আসছেন, যা আগামী নির্বাচনকে আরও প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ করে তুলবে।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here